
মোঃ হাসানুল আলম
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ১% উন্নয়ন তহবিলের প্রকল্প অনুমোদনে ইউএনও মাসুমা জান্নাত ও এসিল্যান্ড রয়া ত্রিপুরার বিরুদ্ধে ৩০% পর্যন্ত ‘কাটমানি’ আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন একাধিক ইউপি সদস্য। জনপ্রতিনিধিদের দাবি, প্রকল্প অনুমোদনের আগে ও চেক তুলতে গিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে নগদ অর্থ দিতে হচ্ছে, যা একরকম অঘোষিত ‘কমিশন’ হিসেবে গৃহীত হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছেন ইউনিয়ন সচিবরা। অথচ এই বরাদ্দকৃত অর্থ জনগণের উন্নয়নে ব্যয় হওয়ার কথা ছিল। অভিযোগ আরও বলছে— প্রকল্প অনুমোদনে নিয়মতান্ত্রিক সভা হয়নি, বরং পছন্দের লোক দিয়ে অল্প কাজ দেখিয়ে লাখো টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি যেন এক ছকবাঁধা লুটপাটের ছাপ বহন করছে।
ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক সদস্য অভিযোগ করেছেন, সড়ক উন্নয়নসহ অন্যান্য প্রকল্পের বরাদ্দ অনুমোদনের পর প্রকল্পের চেক হাতে পেতে হলে ইউএনও ও এসিল্যান্ডের নির্দেশে সচিবরা সরাসরি জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে ৩০% পর্যন্ত নগদ অর্থ দাবি করছেন।
চরলক্ষ্যার এক ইউপি সদস্য জানান, “এক লাখ টাকার প্রকল্পেও ৩০ হাজার টাকা আগেই দিতে হয়। দুই লাখ টাকার প্রকল্পে ৬০ হাজার পর্যন্ত দিয়ে দিতে হয়েছে। টাকা না দিলে প্রকল্প আটকে থাকে।”
অপর এক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছি, কিন্তু এখন দেখছি এখানে আগে টাকা দিতে হয়, তারপর কাজ করতে দেওয়া হয়। এটা তো সরকারি বরাদ্দ, এখানে এইভাবে টাকা নেওয়া কেন?”
কাজ হওয়ার কথা জনগণের উপকারে। কিন্তু এখন জনগণ তো জানতেও পারে না—কী প্রকল্প এলো, কোথায় খরচ হলো।’
দুর্নীতি তদন্তে দুদকের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন
এই ঘটনায় শুধু ইউএনও ও এসিল্যান্ড নয়, বরং এলজিইডি প্রকৌশলী এবং ইউনিয়ন সচিবদের ভূমিকা নিয়ে ওঠা প্রশ্ন প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে। প্রায় ৪০ লাখ টাকার ‘কাটমানি’ অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দ্রুত হস্তক্ষেপ করেছেন এলাকাবাসীদের অনেকেই।