ভূমিকম্পে মিয়ানমারে মৃত্যু ২ হাজার ছাড়িয়েছে, জীবিত উদ্ধার আরও ৪ জন।

ডেস্ক রিপোর্টঃ

দুই হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পের তিনদিন পরও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের জীবিত বের করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারীরা।

সোমবারও মিয়ানমারে জঞ্জালের মধ্য থেকে কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা গেছে, থাইল্যান্ডের বহুতল ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে মিলেছে প্রাণের স্পন্দন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

যদিও ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা সামরিক জান্তার শাসনে থাকা মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধ এই উদ্ধারকাজকে কঠিন করে তুলেছে।
উদ্ধারকাজের জন্য সবজায়গায় পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোতে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত নানা বাধার কারণে ফ্রন্টলাইন এলাকাগুলোতে পৌঁছানো কঠিন,” রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির এক প্রতিনিধি।

চীনের সিনহুয়া বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে থাকা মান্দালয়েও ধসে পড়া ভবনগুলো থেকে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা এক নারী ও একটি মেয়েও রয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভির প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, লাল হেলমেট পরা চীনা উদ্ধারকর্মীরা মান্দালয়ের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে একজনকে জীবিত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বের করে আনছেন। তাকে একটি বিশেষ কম্বলে মুড়ে ধ্বংসস্তুপ থেকে বের করে আনেন উদ্ধারকর্মীরা।
মিয়ানমারের একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী দাবি করেছে, ভূমিকম্পের পরও সামরিক বাহিনী গ্রামগুলোর ওপর বিমান হামলা চালাচ্ছে। সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ত্রাণ কার্যক্রমের স্বার্থে দেশটিতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।

মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সোমবার দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৬৫-তে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে, আহতের সংখ্যা বলেছে প্রায় ৪ হাজার, নিখোঁজ ২৭০ জন। এদিন সামরিক জান্তা এক সপ্তাহের জাতীয় শোকও ঘোষণা করেছে।

এদিকে মিয়ানমারের জান্তার বরাত দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ২৮ জানিয়েছে।
বিদ্রোহী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) বলেছে, ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর সোমবার পর্যন্ত অন্তত ২ হাজার ৪১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

হতাহতদের সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নেওয়ার পর দেশটিতে গণমাধ্যমের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

মৃতদের মধ্যে তিনজন চীনা নাগরিক রয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।

মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে সতর্কও করেছেন। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের এক হিসাবে কেবল মিয়ানমারেই মৃত ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।

 

Facebook
WhatsApp
Email
Pinterest
Telegram